Header Ads

আগামীকাল নতুন সুর্য উঠবে। নতুন দিন শুরু হবে। নতুন একটি পৃথিবীর যাত্রা শুরু হবে। সেই পৃথিবীটা শুধু আল-কোরআনের। এই সপ্ন প্রত্যহই দেখি। শুধু বান্তবায়ন সময়ের অপেক্ষা............

বেসরকারী শিক্ষক জাতীয়করন প্রস্তাবনা

                            বেসরকারী শিক্ষক জাতীয়করন প্রস্তাবনা

-বেলাল আল জাবের

শিক্ষা ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের সাফল্য অনেক। বিনামূল্যে মাধ্যমিক স্তর
পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক প্রদান, ডিগ্রি স্তর পর্যন্ত মেয়েদের উপবৃত্তি
প্রদান, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ,
স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়ন, দ্রুততম সময়ে পরীক্ষার ফল
প্রকাশ ইত্যাদি বর্তমান সরকারের শিক্ষা ক্ষেত্রে সাফল্যের উজ্জ্বল
নিদর্শন।
শিক্ষক ও শিক্ষাবান্ধব এ সরকারের প্রতি শিক্ষক সমাজের তাই সঙ্গত কারণে
প্রত্যাশা অনেক বেশী। সদ্য ঘোষিত পে-স্কেলে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণ
অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন কি হচ্ছেন না, তা নিয়ে যখন সকলেই দ্বিধা-দ্বন্দ্বে
ঠিক তখন সকলেই শেষ ভরসা করে বসেছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর। তিনি সে বিশ্বাসের মূল্য রেখেছেন। সেদিন
থেকে জননেত্রীর উপর দেশের আপামোর বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের নিজেদের
চাকুরি জাতীয়করণের বিষয়ে এক অবিচল আস্তা জন্ম নেয়।
বিদায়ী শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খানের সাথে আলোচনায় যখন মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী জাতীয়করণের ব্যয় জানতে চান, তখনই দেশের সর্বস্তরের
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে নেমে আসে আনন্দের বন্যা। সে বন্যায়
ভেসে চলেছেন তারা।
বেসরকারী শিক্ষক-https://balalislamicmedia.blogspot.com/

আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালী জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন এবং
প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করে যে একক কৃতিত্বের দাবিদার হয়েছেন, সে
গৌরব লাভের সুযোগ আর কারো কপালে কোন দিন জুটবে না। বেসরকারি
শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকুরি জাতীয়করণের সুযোগ জাতির জনকের কন্যা ছাড়া
অন্য কেউ পাক সে আমরা চাই না। তাই সবিনয়ে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের
চাকুরি জাতীয়করণের জন্য কতিপয় প্রস্তাবনা উপস্থাপন করছি।
আমাদের দেশের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানসমূহ বেসরকারি রেখে কেবল শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকুরি জাতীয়করণ
করলে সরকারের আর্থিক দায় অনেক কম পড়বে। প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত
উন্নয়ন বর্তমান নিয়মে সাধিত হবে।
প্রতিষ্ঠানের সকল সম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হবে। সেশন ফি ন্যূনতম
ছাত্র প্রতি এক হাজার টাকা এবং মাসিক বেতন ছাত্র প্রতি ষষ্ঠ শ্রেণিতে
একশত টাকা, সপ্তম শ্রেণিতে একশত বিশ টাকা, অষ্টম শ্রেণিতে একশত পঞ্চাশ
টাকা, নবম শ্রেণিতে একশত সত্তর টাকা, দশম শ্রেণিতে দু'শত টাকা, একাদশে
দুইশত বিশ টাকা, দ্বাদশ শ্রেণিতে দুই শত পঞ্চাশ টাকা নির্ধারণ করলে
সরকারের কোষাগারে প্রচুর অর্থ জমা হবে।
আমাদের দেশে সরকারি হাইস্কুল সমূহে ছাত্র বেতন অতি নগণ্য ও বেসরকারি অনেক
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেশন চার্জ চার-পাঁচ হাজার টাকা এবং ছাত্র বেতন পাঁচশ'
থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। আমাদের দেশ আর্থিকভাবে এগিয়েছে
অনেক। শিক্ষার বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের জনগণ তা-ই মেনে নেবেন বলে
বিশ্বাস।
কঠোর হস্তে নোট গাইড বন্ধ করতে পারলে আমাদের অভিভাবকদের অনেক পয়সা বেঁচে
যায়। এ ছাড়া কোচিং বন্ধ করতে পারলেও বহু টাকা সাশ্রয় হয়। অনেক সময়
কোচিং সেন্টারগুলো আমাদের অভিভাবকদের ফতুর করে ফেলে।
পরীক্ষা ফি প্রচলিত হারে আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দিলে ব্যয়
মিটিয়েও এ খাতে কিছু টাকা উদ্ধৃত থাকবে।
সরকার প্রাইমারি স্কুলগুলো থেকে কোন আয়-উন্নতি না পেয়েও প্রাথমিক
শিক্ষাকে জাতীয়করণ করতে যে সাহসের পরিচয় দিয়েছিলেন, তার উপর ভর করে
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল সম্পদ ও ছাত্র বেতন নিয়ে প্রথম
পর্যায়ে কেবল শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকুরি এবং পরবর্তী পর্যায়ে সকল
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করতে খুব একটা সমস্যা হবার কথা নয়।
তবে এ কাজটি করতে সদিচ্ছা ও সাহস দু'টি-ই প্রয়োজন। আমাদের জাতির জনকের
কন্যা বঙ্গববন্ধু হত্যার এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে সদিচ্ছা ও
সাহসিকতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
ছাত্র বেতন কিংবা প্রতিষ্ঠানের সম্পদ না নিয়েও বেসরকারি
শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকার শতভাগ বেতন স্কেল প্রদান করছেন। ন্যূনতম হলেও
বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, ইনক্রিমেন্ট, উৎসব ভাতা দিচ্ছেন। ভোগান্তি
হলেও অবসর ভাতা তো এককালীন যা পাওয়া যায় তা নেহায়েত কম কোথায়? সব
মিলিয়ে দেখা যাবে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণ জাতীয়করণের প্রায়
কাছাকাছি অবস্থানে। একটা ধাক্কা দিলেই হয়।
বর্তমান শিক্ষা ও শিক্ষক বান্ধব সরকার তা না করলে অন্য কোন সরকার এসে তা
করে কৃতিত্বটুকু লুফে নেবার চেষ্টা করতে পারে। বেসরকারি শিক্ষক সমিতির
নেতৃবন্দ যদি সরকারকে বিষয়টি ভালো করে বুঝাতে পারেন, তবে সকলের স্বপ্ন
পূরণ কেবলই সময়ের ব্যাপার মাত্র। নিজেদের স্বার্থে সকল বিভাজন দূর করে
সকলের এক কাতারে দাঁড়ানোর এখনই উপযুক্ত সময়।
 balalhosan@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.