Header Ads

আগামীকাল নতুন সুর্য উঠবে। নতুন দিন শুরু হবে। নতুন একটি পৃথিবীর যাত্রা শুরু হবে। সেই পৃথিবীটা শুধু আল-কোরআনের। এই সপ্ন প্রত্যহই দেখি। শুধু বান্তবায়ন সময়ের অপেক্ষা............

বেকারত্ব দুরীকরনে ইসলাম : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ ।



বেকারত্ব দুরীকরনে ইসলাম : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

বেলাল আল জাবের

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন- “নভোমন্ডল ভূ মন্ডলের সবাই তার কাছে প্রার্থী তিনি সর্বদাই কোন না কোন কাজে রত আছেন(সূরা আর রাহমানঃ২৯)” উল্লিখিত আয়াতের বক্তব্য অনুযায়ী মহান রাব্বুল আলামীন সদা কর্ম তৎপর তাছাড়া সূরা ইয়াছিনের ৩৮,৩৯,৪০ নং আয়াত ত্রয় পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট বুঝা যায় আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি জগতের কোন উপকরনই বেকার, উদ্দেশ্যহীন, অচল, আসাড় হয়ে পড়ে নেই জগতের প্রতিটি অনু,পরমানু,চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ,নক্ষত্র,দিন,রাত প্রভৃতি নিজ নিজ কর্ম সম্পাদনে সুনিপুন শৃঙ্খলিত হয়ে চলমান রয়েছে এতে প্রতিয়মান হয় যে, প্রকৃতিতে বেকারত্ব বা বিশ্রাম মানেই সৃষ্টিজগতের নির্দিষ্ট প্রবাহ থেকে ছিটকে পড়া প্রকৃতিতে যখন বিধান কার্যকর তখন সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের ব্যাপারে ইসলামের বক্তব্য কি? তা জানা সকলের আবশ্যক

আমরাজানি ইসলাম জীবন সংশ্লিষ্ট স্বভাবজাত ধর্ম মানবের প্রতিটি প্রয়োজন তাদের মনুষ্য পদ্বতিতে অত্যন্ত সরল সাবলীল করে সমাধান দিয়েছে ইসলামএক্ষেত্রে দৈব বা ঐশ্বরীক পদ্বতি বর্জন করা হয়েছে সুবিদিত ভাবেই সে জন্য ইসলাম বেকারত্বকে  সর্বকালের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ অভিশাপ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কারন বেকারত্ব দারিদ্র ডেকে আনেফলশ্রুতিতে ব্যক্তি বিভিন্ন অপরাধের দিকে ধাবিত হয় সমাজে শুরু হয় চুরি,ডাকাতি,চিনতাই,হত্যা,মাদকাসক্ত, ইভটিজিং,প্রতারনা সহ নানাবিদ অন্যায় কর্মএর সমাধান কল্পে ইসলামের নির্দেশ হল- “ অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর আল্লাহকে অধিক স্মরন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও(সূরা জুমুয়াহঃ১০) আয়াতে উল্লিখিতফযল(অনুগ্রহ)” শব্দটিকে গভীর মনযোগের সাথে বুঝতে হবে শব্দটির মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালা কি বুঝাতে চাচেছন? এখানে গভেষনার অন্তর চক্ষু খুলে দিন! তবেই বুঝবেনফযল(অনুগ্রহ)” দ্বারা আল্লাহর উদ্দেশ্য হল কর্মক্ষেত্র তৈরী করার জন্য যতগুলো উপকরন বা নিয়ামতের প্রয়োজন সব কিছুর যোগান তিনি পূর্বে থেকেই তৈরী করে বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছেন এখন মানুষের কর্তব্য হল বেকার না থেকে কর্মের মাধ্যমে এই উপকরনগুলো একত্রিত করে একটি কার্যকারনে পরিনত করা স্থানে আল্লাহ তায়ালা মানুষের কর্মগুলোকে পুরোপুরি সৃজনশীলতা অধ্যবসায়ের উপর ছেড়ে দিয়েছেন যে তার কর্মে যতটুকুন মনযোগী শ্রম দিবে সে ততটুকুই সফল হবে আর তাই খোদা প্রদত্ত মেধা কাজে লাগিয়ে  আজ যতই মহাকাশে উড্ডয়ন করুক, দুরারোগ্য ব্যাধির প্রতিষেধক এবং চিকিৎসা আবিস্কার হউক,বিশাল বিশাল শিল্প কারখানা নির্মান, প্রযুক্তির বিস্ময়কর ইন্টারনেটের আবিস্কার, গগন চুম্বি সুরম্য অট্রালিকা দেখে অত্যাচর্য হবার কিছুই নেই বরং ভবিষ্যতে আরও অনেক আল্ট্রা(অত্যাধুনিক) অবিস্কার অপেক্ষা করছে এটাই স্বাভাবিক যা আল্লাহই ব্যবস্থা করে রেখেছেন শুধু আমার আর অপনার বেকারত্ব গুছিয়ে কর্মে নেমেপড়ার অপেক্ষা ফযল(অনুগ্রহ) এর সদ্যব্যবহার করতে নিরন্তর কাজ করে যাওয়া, ইহা আল্লাহর নির্দেশ এই কর্ম যেমন নিজের পার্থিব প্রয়োজন মেটানোর জন্য হবে পাশাপশি সমাজ জাতীয় উন্নয়নের জন্য হওয়া আবশ্যক আর সর্বপরি কাজের উদ্দেশ্যে থাকতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি এখানেই ইসলামী কর্ম ব্যবস্থা এবং অনৈসলামী কর্ম ব্যবস্থার পার্থক্য অনৈসলামী ব্যবস্থায় কর্মকে শুধু মাত্র বস্তুতান্ত্রিক জীবনের প্রয়োজনীয়তা মিটানো আর উপভোগের কার্যকারন হিসেবে গন্য করে তা পালনে উৎসাহিত করা হয় অপরদিকে ইসলাম কর্মকে পার্থিব প্রয়োজন মিটানোর পাশাপাশি পারলৌকিক জীবনের মুক্তির সাথে সম্পৃক্ত করেছে যেমন আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন- “ আমার ইবাদত করা ছাড়া আর কোন কাজের জন্য আমি মানব জিন জাতিকে সৃষ্টি করিনি(সূরা জারিয়াতঃ৫৬)
চাকরী-https://balalislamicmedia.blogspot.com/

অল্লাহ তায়ালা সম্পদশালী ব্যক্তির উপর যাকাত ফরজ করেছেন এর সাথে বান্দাহর শারিরীক সামর্থ্য থাকলে জীবনে একবার পবিত্র হজ্জব্রত পালন করা ফরজইবাদতরে দুটি বৃহৎ কর্ম পুরোপুরি সম্পদ অর্জনের উপর নির্ভরশীল কাজেই আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের উদ্দেশ্যে সম্পদ অর্জনের লক্ষে নিরন্তর কাজ করে যাওয়া মুমিনের সর্বোত্তম ইবাদত পবিত্র কোরআন কারীমে  এরশাদ হচ্ছে- “ আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন তা দিয়ে পরকালের গৃহ অনুসন্ধান কর, এবং ইহকাল থেকে তোমরা লাভবান হবার কথা ভূলে যেওনা, তুমি অনুগ্রহ কর যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন(সূরা কাসাসঃ৭৭) প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর প্রকৃতিকে জয় করে সম্পদশালী হওয়ার জন্য বান্দাহকে উৎসাহিত করেছেন যাতে সে সম্পদ অল্লাহর রাস্তায় খরচ করে জান্নাতের(উদ্যান বা বেশেত) পথ সুগম করতে পারে কর্মের কোন বিকল্প নেই অলসতা কর্মহীনতা মানবজীবনে ধ্বংসের মূল চাবিকাঠি রাসুল (সাঃ) কারোপ্রতি মননিবেশ করলেই সর্ব প্রথম তার পেশা সম্পর্কে জানতে চাইতেন যদি লোকটি বলত সে কোন কাজ করেনা তাহলে নবিজী রাগ করে বলতেন তুমি আমার অনুকুল্য হারালে কোন মুমিনের যদি পেশা না থাকে, তাহলে সে নিজের ধর্মকেই জীবিকার উপায় করে নেয় অর্থাৎ জীবিকার নূন্যতম জোগান না থাকলে মানুষের ধর্ম বিশ্বাস বিপদের মুখে পড়ে যায় হেন অবস্থায় সে জীবনের প্রয়োজন মিটানোর তাগিদে বিভিন্ন ধর্ম বিবর্জিত অপকৌশলের আশ্রয়ী হয় উদাহরন স্বরুপ বলা যেতে পারে, বর্তমানের আলেমদের কোরআন তেলাওয়াতের খতম অনুষ্ঠান করে বিনিময় গ্রহন করা, মিলাদ-মাহফিলকে কেন্দ্র করে উচ্চ মুল্য হাকিয়ে তা গ্রহন শরীয়তের নিষিদ্ধ বিষয়টির অবাদ প্রচলন, কুরবানীর পশু জবাই করে গরীবের হক চাঁমড়াকে তার বিনিময়ে হাদিয়া হিসেবে গ্রহন ইত্যাদি হাজারো প্রতারনার ক্ষেত্র তৈরী করে অপকৌশলের চুড়ান্ত প্রয়োগ হচ্ছে অথচ শুধুমাত্র আল্লাহর প্রেরিত মহান নবী রাসূলগনের জীবন পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে তাদের প্রত্যেকের জীবন পরিচালনা ছিল বর্তমান চিত্রের সম্পুর্ন বিপরীত তারা সকলেই নবুয়তের মহান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য কর্মে লিপ্ত হতেন হযরত আদম (আঃ) পৃথিবীতে অবতরনের পর জীবিকা নির্বাহের জন্য হযরত জিব্রাঈল আমীন এর নিকট পরামর্শ চাইলে তিনি উত্তরে বললেন- হে আদম! তুমি যদি নিজস্ব প্রয়োজন মিটাতে চাও তাহলে কৃষি কাজের অনুবর্তী হও হযরত নূহ (আঃ) দীর্ঘ নয়শত পন্ঞ্চাশ বছর যাবৎ কাঠমিস্ত্রির পেশায় নিয়োজিত থেকে দাওয়াতি কাজ করেন একই ভাবে হযরত দাউদ (আঃ) খেজুর গাছের পাতা দিয়ে জাম্বিল বানিয়ে তা বাজারে বিক্রি করতেন হযরত মূসা (আঃ) হযরত শোয়াইব (আঃ) এর দশ বছর রাখাল বৃত্তি করেছিলেন হযরত ঈসা (আঃ) কে একজন জিজ্ঞেস করেছিল আমাদের মাঝে কে উত্তম? তিনি বললেন যে পরিশ্রম করে নিজের রোজকারের টাকায় খাবার গ্রহন করে আর আমাদের প্রিয় নবিজী (সাঃ) তো স্বয়ং শৈশবে রাখাল বৃত্তি করেছেন, যৌবনে সিরিয়া সহ বিভিন্ন শহরে ব্যবসার কাজে নিয়োজিত ছিলেন এমন কি রাসুল (সাঃ) বলেছেন- “ শ্রমিক আল্লাহর বন্ধু(বায়হাকী)”

অন্যদিকে আল্লাহ তায়ালা বলেন- “ আর পৃথিবীতে কোন বিচরনশীল নেই, তবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয় সব কিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে(সূরা হুদঃ৬) অনেকের মনে প্রশ্ন উদিত হতে পারে যে,রিযিকের দায় দায়িত্ব যেহেতু মহান আল্লাহ স্বয়ং নিয়ে নিয়েছেন তাহলে মানুষ কেন কাজ করে করে পরিশ্রান্ত হবে? আর কাজের প্রতি ইসলাম এত গুরত্ব দেয়ার কারনইবা কি? ব্যাপারটি কি স্ব বিরোধী নয়? এর উত্তর ইতিপূর্বে সূরা জুমার ১০ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে এখানে সম্পুরক বলতে হয়- রিযিক দাতা মানে হল সৃষ্টিকুলের  কর্মের সক্ষমতাকে তার ফযল(অনুগ্রহ) অর্জনের কাজে সহযোগিতা করা অর্থাৎ বান্দা যখন কোন কাজের প্রতি উদ্দেগী হবে তৎখনাৎ কাজটি সম্পর্ন করার সক্ষমতা তৈরী সহ আনুসাংঙ্গিক বস্তুর যোগান সহযীকরন হল রিযিকদাতার দায়িত্ব বিষয়টি আরেকটু গভীরভাবে পর্যালোচনা করা যাক মানুষ যখন কোন প্রকল্প গ্রহন করে তখন সে কাংখিত প্রকল্পে সফলতা পেতে  প্রকল্পের সার্বিক বিষয় নিয়ে গভীর পর্যালোচনা করে প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যা সম্ভাবনা নিয়ে দীর্ঘ গভেষনার পরে কাজ আরাম্ভ করেকিন্তু দেখা গেল প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাঝ পথে এসে সামান্য ত্রুটি বা নতুন কোন সমস্যা উদ্ভবের কারনে ব্যক্তি প্রকল্প থেকে সফলতা পায়না এর কারন হল মানুষ ভবিষ্যৎ জ্ঞানের মালিক নয় প্রকল্প বাস্তবায়ন কালীন বা পরবর্তী কি কি সমস্যা তার জন্য অপেক্ষা করছে সে তা জানেনা আর যেহেতু তাকে সাহায্য করার মত কেউ নেই তাই সে সফল হতে পরেনা অপরদিকে   প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যদি আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল(ভরসা) থাকতো তাহলে প্রকল্পটি বাস্তবায়নকালীন বা তৎপরবতী যে যে সমস্যা এসে উপস্থিত  হত তখনই আল্লাহর দায়িত্ব হত তা সমাধানের উপকরন তৈরী করে দেয়া কারন আল্লাহ রিযিকদাতা এবং পূর্বাপর সকল জ্ঞানের অধিকারী আবার তাওয়াক্কুল(ভরসা) মানে এমন নয় যে, ইবাদতে মসগুল থেকে আল্লাহর নিকট রিযিকের প্রার্থনা করে নিজেকে কর্ম থেকে মুক্ত রাখা চিন্তার বিচ্যুতির কারনে অনেকে বলে থাকেন- কর্ম পার্থিব স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় তাই ইহা ইমান, তাকওয়া বা ধার্মিকতার সাথে সাংগর্ষিক তার থেকে উত্তম হল বৈরাগ্য গ্রহন করে পথে-প্রান্তরে, বনে-জঙ্গলে, মসজিদে-মক্তবে দীন প্রচার অথবা ধ্যানমগ্ন হওয়া  অথচ তা পুরো পুরি ইসলামী শরীয়তের বিপরীত রিতী আদতে তা হিন্দু, বুদ্দ সহ বিধর্মীদের পদ্বতি অথচ শরিয়তে বৈধ এমন যে কোন কর্মে লিপ্ত থেকে নিজ পরিবারের জীবিকা নির্বাহের জন্য ইসলাম উৎসাহ দিয়েছে মুসলিম যে পেশায়ই লিপ্ত থাকবে তাকে ভালবাসা আন্তরিকতার সাথে সম্পন্ন করার জন্য কোরআন,হাদীস বার বার তাগিদ দিয়েছে এমন কোন কর্ম নেই যা ইসলাম ছোট করে দেখেছে হোক তা রাস্তার পাশের টং দোকান বা বৃহৎ নিয়োগ কর্তা কতৃক নিয়োগ কৃত বড় চাকুরী কারন যারাই কর্ম প্রচেষ্টা চালায় তারাই ইসলামে উত্তম এবং তারাই আরোহন করে উন্নতি অগ্রগতির শীর্ষ শিখরে, জ্ঞানী বেকাররা নয়কারন জ্ঞানী বেকার তার লব্দ প্রজ্ঞাগুলো বাস্তবে কাজে লাগাতে পারেনা সুতরাং  আসুন নিজের প্রয়োজন পুরন, জাতীয় জীবনে উন্নতি পরকালীন মুক্তি লাভের আশায় আজ এখুনি কোননা কোন কাজে নেমে পড়ি সফলতা দানের মালিক আল্লাহ

আমাদের ইউটিউব লিংক  yoytube
 

1 comment:

  1. অসাধারন পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। Islamic Thinking Bangladesh

    ReplyDelete

Powered by Blogger.